আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কাকে বলে? সংজ্ঞা ও গুরুত্ব।
(ভূমিকা)
আমরা যেসব দ্রব্য ও সেবা কর্ম ভোগ করি তার অনেকগুলি আমাদের দেশে উৎপাদিত হয় না। যেমন আপেল, গুঁড়ো দুধ, গাড়ি ইত্যাদি। কিছু দ্রব্য ও সেবা কর্ম আমাদের দেশে উৎপাদিত হয়। কিন্তু এসব উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য উপকরণ বিদেশ থেকে আনা হয়। যেমন ধান উৎপাদনের ব্যবহৃত সেচ যন্ত্র, সুতা উৎপাদনের ব্যবহৃত তুলা, বিমান ভ্রমণের জন্য বিমান ইত্যাদি। আবার আমাদের দেশে যে সকল পণ্য উৎপাদিত হয় তার সব আমরা ব্যবহার করি না, আমরা বিদেশীদের কাছে বিক্রয় করি। যেমন তৈরি পোশাক, পাট ইত্যাদি। এক দেশের সঙ্গে অপর দেশে দ্রব্য ও সেবা কর্ম এরূপ লেনদেন কে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বলে। কোন কোন দেশের জন্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্য খুব গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ হলেও এক দেশ থেকে অন্য দেশে পণ্য সামগ্রী অবাধে চলাচল করতে পারে না, কিছু বিধি নিষেধ থাকে ।
এখন জানবো আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কাকে বলে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সংজ্ঞা ও গুরুত্ব।
![]() |
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কাকে বলে? সংজ্ঞা |
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কাকে বলে?
পৃথিবীতে কোন দেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ নয় ।
একটি দেশের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে আসে। আবার একটি দেশ থেকে বিভিন্ন পণ্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যায়। পৃথিবীর দুটি সার্বভৌম দেশের মধ্যে দ্রব্য ও সেবা কর্মের লেনদেন কে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বলে। একটি দেশ যে সকল পণ্য তুলনামূলকভাবে কম খরচে উৎপাদন করতে পারে সে সকল পণ্যের উৎপাদনে বিশেষায়ন করে এবং এ সকল পণ্যের উদ্বৃত্ত অংশ অপরাপর দেশের উদ্বৃত্ত পণ্যের সঙ্গে বিনিময় করে।
রপ্তানি কাকে বলে?
একটি দেশ যে সকল দ্রব্য ও সেবা কর্ম অন্যান্য দেশের নিকট বিক্রয় করে তাকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বলে।
আমদানি কাকে বলে?
একটি দেশ অন্যান্য দেশের নিকট থেকে যে সকল দ্রব্য ও সেবা কর্ম ক্রয় করে, তাকে আমদানি বলে। একটি দেশ যে সকল দ্রব্য সেবা কর্ম আমদানি করে সেগুলোকে দু ভাগে ভাগ করা যায় কতগুলো আমদানি আছে যা একটি দেশ উৎপাদন করতে পারে কিন্তু অন্যান্য দেশ তা তুলনামূলকভাবে কম খরচে উৎপাদন করতে পারে। আর কতগুলো আমদানি আছে যা এই দেশে উৎপাদিত হয় না। এ ধরনের আমদানিকে অপ্রতিযোগিতামূলক আমদানি বলে।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের গুরুত্ব কি?
বর্তমানকালে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য গুরুত্বপূর্ণ। তবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের গুরুত্ব সকল দেশে সমান নয়। নিচের লেখা থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের গুরুত্ব সম্পর্কে মোটামুটি একটি ধারণা পাওয়া যায়।
বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ড ইত্যাদি ছোট দেশ সমূহে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য জাতীয় অর্থনীতিতে অতি গুরুত্বপূর্ণ। বেলজিয়ামে রপ্তানি জাতীয় উৎপাদনের মোট ৬৯%। বড় দেশ সমূহের জাতীয় অর্থনীতিতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমেরিকা জাপান প্রভৃতি দেশের অভ্যন্তরীণ বাজার অনেক বড় যেখানে বিচিত্রমুখী পণ্যের বিপুল চাহিদা রয়েছে অর্থনীতি অনেক বৈচিত্র্যময়। যেখানে বহু ধরনের পণ্য উৎপাদিত হয়। এসব দেশের অর্থনীতি একাই অনেক দেশের অর্থনীতির সমান।
ভারতের অর্থনীতির রপ্তানি নির্ভরতা কম। ভারত জিডিপি এর শতকরা মাত্র 10 ভাগ রপ্তানি করে। ভারতের অর্থনীতি অনুন্নত হলেও বড় ও বৈচিত্র্যময়। বাংলাদেশের অর্থনীতি জিডিপি এর মাত্র ১০ ভাগ রপ্তানি করতে সক্ষম হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে মনে রাখা দরকার যে বাংলাদেশের ১৯৯৪ সালে জিডিপির ২০.৪ভাগ আমদানি করেছে। এসব আমদানির অধিকাংশ মূলধন দ্রব্য এবং মাধ্যমিক, পণ্য যা উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয়। এদিক দিয়ে বিবেচনা করলে বাংলাদেশের জন্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যে সকল অর্থনীতি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বড় ভূমিকা পালন করে সেসব অর্থনীতিকে মুক্ত অর্থনীতি বলে।
দেশের মোট উৎপাদনের শতকরা হার
দেশ = রপ্তানি
বেলজিয়াম = ৬৯ শতাংশ
নেদারল্যান্ড = ৫১ শতাংশ
কানাডা = ৩০ শতাংশ
যুক্তরাজ্য = ২৫ শতাংশ
ফ্রান্স = ২৩ শতাংশ
ইতালি = ২৩ শতাংশ জার্মানি = ২২ শতাংশ
যুক্তরাষ্ট্র = ১০ শতাংশ জাপান = ৯ শতাংশ
বাংলাদেশ = ১২ (২০.৪)
ভারত = ১২ শতাংশ
উৎস-বিশ্ব ব্যাংক,
সারসংক্ষেপ
- দুটি সার্বভৌম দেশের মধ্যে দ্রব্য ও সেবা কর্মের লেনদেন কে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বলে।
- পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের গুরুত্বের তারতম্য রয়েছে। বাংলাদেশের জন্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
আপনার আরো প্রয়োজনীয় বিষয় এখানে দেখতে পারেন। 👇👇👇 ইংরেজি
ইংরেজি বর্ণ বর্ণমালা কি? উদাহরণসহ বিস্তারিত
ইংলিশ গ্রামার কাকে বলে? ইংলিশ গ্রামার শেখার প্রয়োজনীয়তা
ভাষা কাকে বলে?মাতৃভাষা মানে কি? ভাষার প্রয়োজনীয়তা এবং ব্যবহার
Post a Comment