অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কাকে বলে?
অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মধ্যে পার্থক্য কি? সংজ্ঞা বিস্তারিত আলোচনা।
প্রথমে জানব,
অভ্যন্তরীন ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কাকে বলে?
একটি দেশের দুটি অঞ্চলের মধ্যে দ্রব্য ও সেবা কর্মের লেনদেন কে অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য বলে।
যেমনঃ চট্টগ্রাম থেকে কোন একটি দ্রব্য পরিবহনের মাধ্যমে বা যেকোন ভাবে সিলেট অঞ্চলে যাই। আবার সিলেট অঞ্চল থেকে কোন একটি দ্রব্য চট্টগ্রামে আসে। এ দুটি অঞ্চলের মধ্যে লেনদেন কে অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য বলে।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কাকে বলে?
দুটি স্বাধীন দেশের মধ্যে দ্রব্য ও সেবা কর্ম লেনদেন কে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বলে।যেমনঃ বাংলাদেশ থেকে ভারতে জামদানি শাড়ির, ইত্যাদি রপ্তানি করা হয়। আবার ভারত থেকে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করা হয়। একটি দেশের দুটি অঞ্চলের মধ্যে পণ্যের লেনদেনের কারণ এবং দুটি দেশের মধ্যে পণ্যের লেনদেনের কারণ মূলত একই। দুটি দেশের মধ্যে যে কারণে বাণিজ্য হয় সে কারণগুলো একই দেশের দুটি অঞ্চলের ক্ষেত্রে বাণিজ্যের জন্যও প্রযোজ্য। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মধ্যে মৌলিক মিল থাকা সত্ত্বেও কিছু পার্থক্য আছে যে জন্য এ সম্পর্কে আলাদাভাবে আলোচনা করার প্রয়োজন হয়।
অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কাকে বলে? বিস্তারিত আলোচনা |
অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মধ্যে পার্থক্য কি?
১. বিভিন্ন মুদ্রা
একটি দেশের অভ্যন্তরে সকল প্রকার বাণিজ্য একই মুদ্রায় সম্পন্ন হয়। যেমনঃ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সকল প্রকার লেনদেন টাকায় সম্পন্ন হয়। কিন্তু দুটি দেশের মধ্যে বাণিজ্যে দুটি মুদ্রা জড়িত থাকে। বিভিন্ন দেশের মুদ্রার বিনিময় হার পরিবর্তিত হতে পারে এবং বর্তমানকালে তা পরিবর্তিত হয়। যেমন ১৯৭১-১৯৭২ সালে টাকা ও ডলারের বিনিময়ে হার ছিল ১ আমেরিকান ডলার= ৭.৩০ টাকা, কিন্তু ১৯৯৭-১৯৯৮ সালের মাঝামাঝি অবস্থায় তা দাঁড়ায় এক ডলার = ৪৬.৫০ টাকায়। বিনিময় হারের পরিবর্তনের ফলে নানা রূপ জটিলতা ও নীতি নির্ধারণে সমস্যা দেখা দেয়।
২. রাজনৈতিক উপাদান।
যে কোন দেশের সরকার তার নাগরিকদের কল্যাণের জন্য চিন্তা করে। কিন্তু তার গৃহীত নীতির দ্বারা বিদেশি নাগরিকগণ কিভাবে প্রভাবিত হবে সে সম্পর্কে চিন্তা থাকে না। একটি দেশ তার সুবিধার জন্য বিদেশ থেকে আমদানিকৃত পণ্যের উপর শুল্ক করতে পারে বা অন্য কোন রূপ বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে। এর ফলে এক দেশ থেকে অন্য দেশে পণ্য চলাচল বাধাগ্রস্ত হয় যা একটি নির্দিষ্ট দেশের মধ্যে ঘটে না।
৩.উপাদানের সচলতা
কোন দেশের অভ্যন্তরে শ্রম প্রয়োজন মত এক স্থান থেকে অন্য স্থানে কর্মস্থান পরিবর্তন করতে পারে এবং চাকরি নিতে পারে। কিন্তু এক দেশ থেকে অন্য দেশে অভিবাসনের পথে নানা রূপ বাধানিষেধ আরোপ করা হয়, বিদেশি নাগরিকদের চাকরি গ্রহণের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত শর্ত আরোপ করা হয়।
দেশের অভ্যন্তরে মূলধনের সচলতার তুলনায় অন্ত দেশীয় সচলতা কম। মূলধন দ্রব্য এক দেশ থেকে অন্য দেশে পরিবহন করা ব্যয় সাপেক্ষ। বৈদেশিক বিনিয়োগ এর উপর নানান বিধিনিষেধ থাকতে পারে। তাছাড়া বিদেশে বিনিয়োগ কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ যেমনঃ বিদেশের সরকার কর্তৃক স্বত্বনিরসনের ঝুঁকি এবং বিনিময় হার পরিবর্তনের ঝুঁকি।
সারসংক্ষেপ
১. একটি দেশের দুটি অঞ্চলের মধ্যে পণ্যের বিনিময়কে অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য এবং দুই বা ততোধিক দেশের মধ্যে পণ্যের বিনিময় কে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বলে।
২. অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মূল কারণ একই হলেও দুইয়ের মধ্যে কিছু লক্ষণীয় পার্থক্য রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিভিন্ন মুদ্রা জড়িত, রাজনৈতিক উপাদানের প্রভাব বেশি এবং উৎপাদনের সচলতা কম।
আশা করি এই পোস্ট থেকে আপনারা জানতে পেরেছেন যে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কাকে বলে? অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মধ্যে পার্থক্য কি।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কাকে বলে? সংজ্ঞা ও গুরুত্ব
ইংরেজি বর্ণ ও বর্ণমালা কি? উদাহরণসহ বিস্তারিত
ইংলিশ গ্রামার কাকে বলে? ইংলিশ গ্রামার শেখার প্রয়োজনীয়তা
ভাষা কাকে বলে? মাতৃভাষা মানে কি? ভাষার প্রয়োজনীয়তা এবং ব্যবহার
Post a Comment